
চবি প্রতিনিধি – মেহেদী হাসান ইমন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দলীয় রাজনীতি থেকে ছাত্রদের সচেতন থাকার আহ্বান।
রাষ্ট্রচিন্তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম।রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান মিলনায়তনে ‘নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের এই প্রধান সমন্বয়ক বলেন, বর্তমানের যে নির্বাচন ও সংবিধান তা ব্রিটিশদের হাতে গড়া। তারা উপমহাদেশে এসেছিল ব্যবসা করার জন্য। সেই স্বার্থে তারা খাজনা আদায় বেশি লাভজনক মনে করে এসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের আইন প্রণয়ন করে। এগুলো ছিল দমন পীড়নের। ব্রিটিশরা গভর্নরকে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দিয়েছিল, তাদের অনুসরণে পাকিস্তানের সংবিধানে প্রেসিডেন্টকে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর করা হয়েছে। তাদের সরাতে হলে তাই বার বার অভ্যুত্থান করতে হয়। সংবিধানে এই ক্ষমতার ব্যক্তিদের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার নিয়ম থাকতে হবে।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ছাত্র রাজনীতি নামে এখানে ছাত্র ব্যবসা চলে। আমার ছাত্ররা এখানে আছে, তারা রাজনীতি নিয়ে সজাগ থাকবে। তারা সজাগ আছে বলেই আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্ত দলীয় লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে পড়ে থাকবো না। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি ছাড়া যোগ্য নেতা তৈরি হলে আমরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়কে নেতা তৈরির কারখানা বানাব?
চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, গত ১৬ বছরে আমি রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পাইনি। এতদিন ধরে আমাদের মস্তিষ্ক কিনে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু ছিল। আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা লুকিয়ে রাখার একটি প্রবণতা শুরু হয়েছিল। সংবিধানে একক ব্যক্তিকে এত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে তাকে নির্বাচন কমিশন ভয় পায়, জনগণ ভয় পায়। এসব পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করার সময় এসেছে।
সভায় দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসা চন্দনপুরার শিক্ষক ও চিন্তক মুহাম্মদ মুনির উদ্দিন বলেন, আধুনিক রাষ্ট্রে সবাই দেশের নাগরিক। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান, নাস্তিকসহ সব মতাদর্শের সবার অধিকার থাকবে। ইসলাম ধর্মেও আল্লাহ ও নবী সবার মত প্রকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
সভায় চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খ আলী আর রাজী ও সহযোগী অধ্যাপক সায়মা আলমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।